, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চৌদ্দগ্রামে ইউএনও’র সাথে সাংবাদিক সমিতির মতবিনিময় অনুষ্ঠিত চৌদ্দগ্রামে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির সময় জনতার হাতে আটক ৩ গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করলো স্থানীয়রা এদেশে আর কাউকে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেওয়া হবে না চৌদ্দগ্রামে শ্রীপুর ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত সাংবাদিকতায় সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের মানুষিকতা থাকতে হবে প্রশিক্ষণ কর্মশালায়-শিবলী সাদিক খান ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই ৩১ দফার মূল লক্ষ্য — বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী ইয়াছিন চৌদ্দগ্রামে তুলাপুষ্কুরণী সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সংবর্ধনা প্রদান “আমরা শহীদ জিয়াউর রহমানের সৈনিক, আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই”- কামরুল হুদা কুমিল্লা সীমান্তে ০৫ কোটি ৭০ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ চৌদ্দগ্রামে প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী নারীর জমি দখল প্রতিবাদ করায় আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

কুমিল্লায় নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী

 

কুমিল্লার দেবিদ্বারে চাঞ্চল্যকর করিম ভূঁইয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিহতের স্ত্রীসহ ৪ জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেবিদ্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

পুলিশ জানায়, গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর মন্ত্রীবাড়ি এলাকার মৃত আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে আব্দুল করিম ভূঁইয়া নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার পর করিমের ভাই আমির হোসেন দেবিদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে নিখোঁজের ১ মাস ৫দিন পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়ির একটি টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

 

এ ঘটনায় ঘাতক স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তার তিন ভাই ইসরাফিল, গোলাম হাক্কানী ও মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে গত শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তারা।

জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকারীরা জানান, নিহত করিম একজন মাদকসেবী ছিলেন। মাদক সেবন করে তিনি প্রায়ই স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে পাশবিক নির্যাতন করতেন। এ কারণে ক্ষোভ থেকে তারা করিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

 

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ আগস্ট রাতে মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে করিমকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেন শ্যালক ইসরাফিল। সেখানে প্রথমে তিন ভাই মিলে তাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। এ সময় তার মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় তার।

 

এসময় স্ত্রী তাছলিমা সেই রক্ত মুছে ফেলেন। পরে প্রথমে মরদেহটি বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। সকালে মরদেহ ভেসে উঠলে আবারও স্ত্রী এবং ভাইয়েরা মিলে খাল থেকে মরদেহ ওপরে তুলে আনেন। পরে হাত-পা বেঁধে বড় ভাইয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহটি ফেলে দেওয়া হয়।

 

ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, স্ত্রী তাছলিমার পরিকল্পনায় তিন ভাইসহ চারজনে মিলে তাকে হত্যা করেন। মাদকের লোভ দেখিয়ে ভালো ব্যবহার করে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের ভাই আমির হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। পরে সন্দেহভাজন আসামিদের ওপর নজরদারি ও গ্রেপ্তারের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।

জনপ্রিয়

চৌদ্দগ্রামে ইউএনও’র সাথে সাংবাদিক সমিতির মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

কুমিল্লায় নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

কুমিল্লার দেবিদ্বারে চাঞ্চল্যকর করিম ভূঁইয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিহতের স্ত্রীসহ ৪ জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেবিদ্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

পুলিশ জানায়, গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর মন্ত্রীবাড়ি এলাকার মৃত আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে আব্দুল করিম ভূঁইয়া নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার পর করিমের ভাই আমির হোসেন দেবিদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে নিখোঁজের ১ মাস ৫দিন পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়ির একটি টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

 

এ ঘটনায় ঘাতক স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তার তিন ভাই ইসরাফিল, গোলাম হাক্কানী ও মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে গত শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তারা।

জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকারীরা জানান, নিহত করিম একজন মাদকসেবী ছিলেন। মাদক সেবন করে তিনি প্রায়ই স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে পাশবিক নির্যাতন করতেন। এ কারণে ক্ষোভ থেকে তারা করিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

 

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ আগস্ট রাতে মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে করিমকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেন শ্যালক ইসরাফিল। সেখানে প্রথমে তিন ভাই মিলে তাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। এ সময় তার মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় তার।

 

এসময় স্ত্রী তাছলিমা সেই রক্ত মুছে ফেলেন। পরে প্রথমে মরদেহটি বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। সকালে মরদেহ ভেসে উঠলে আবারও স্ত্রী এবং ভাইয়েরা মিলে খাল থেকে মরদেহ ওপরে তুলে আনেন। পরে হাত-পা বেঁধে বড় ভাইয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহটি ফেলে দেওয়া হয়।

 

ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, স্ত্রী তাছলিমার পরিকল্পনায় তিন ভাইসহ চারজনে মিলে তাকে হত্যা করেন। মাদকের লোভ দেখিয়ে ভালো ব্যবহার করে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের ভাই আমির হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। পরে সন্দেহভাজন আসামিদের ওপর নজরদারি ও গ্রেপ্তারের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।