চৌদ্দগ্রামে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির সময় জনতার হাতে আটক ৩ গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করলো স্থানীয়রা
মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতি করার সময় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা তাদেরকে গণপিটুনি দেয়। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাত দলের আরও কয়েকজন সদস্য পালিয়ে গেছে। আহত ডাকাতদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান ও তাদের বিরুদ্ধে থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৪নং ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহন হোসেন বক্কর (২৫), একই এলাকার ১৫নং ওয়ার্ডের সামবকসি গ্রামের আবু মিয়ার ছেলে মো. সাগর (৪০) এবং কোতোয়ালী থানাধিন জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান ফাহিম (২০)। ঘটনাটি ঘটে ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের বাতিসা গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার নাজমুল হাসান রকির বাড়িতে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার সেকেন্ড অফিসার, উপ-পরিদর্শক মো. ছানা উল্লাহ।
থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের বাতিসা গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী মো. নাজমুল হাসান রকি শনিবার দিবাগত রাতে প্রতিদিনের মত নিজ কাজকর্ম শেষে বাসায় ফিরেন। এ সময় তিনি তার ব্যবহৃত টিভিএস মোটরসাইকেলটি নিজ ঘরে তালা মেরে স্বযত্নে রাখেন। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে রাত অনুমান এগারোটায় তিনি শয়নকক্ষে ঘুমাতে যান। একপর্যায়ে রাত অনুমান সাড়ে বারোটায় ঘরের কলাপসিবল গেইটে ধাক্কা-ধাক্কির শব্দে তার ঘুম ভাঙে। তিনি দৌড়ে এসে দেখেন অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তি (ডাকাত দল) ঘরের গেইটের তালা ভেঙ্গে ঘরে রাখা তার মোটরসাইকেলটির লক ভেঙ্গে লুন্ঠন করে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় তিনি বাধা প্রদান করলে ডাকাত দলের সদস্যরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে রকিকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি ও কোপ মারতে থাকে। ডাকাতদের হামলায় ভুক্তভোগি রকি গুরুতর আহত হন। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যদের শোর-চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী ধাওয়া করে ৩ ডাকাতকে আটক করে এবং গণপিটুনি দেয়। স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে ডাকাত দলের আরও কয়েকজন সদস্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি হিরো মোটরসাইকেল জব্দ করে এলাকাবাসী। পরদিন সকালে সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটক ৩ ডাকাতকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে দুজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা প্রদান করা হয়। সোমবার দুপুরে আটককৃতদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গুলজার আলম বলেন, ডাকাতিকালে স্থানীয়রা ৩ ডাকাতকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। সংবাদ পেয়ে তাদের উদ্বার করা হয়। চিকিৎসা ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামীদের আটকের ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুর রহিম বাবলু বার্তা সম্পাদক : তাজুল ইসলাম মিয়াজি
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত