, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চৌদ্দগ্রামে শ্রীপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে কামরুল হুদার পক্ষে নির্বাচনী গণমিছিল অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় দৈনিক বর্তমান বাংলার প্রতিনিধি সভা এবং পরিচয় পত্র বিতরণ সম্পন্ন চৌদ্দগ্রামে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম এর কমিটি গঠন চৌদ্দগ্রামের বাতিসায় বিএনপি’র ওয়ার্ড সেক্রেটারি সহ বহু নেতাকর্মীর জামায়াতে যোগদান ওসমান হাদীর উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবীতে চৌদ্দগ্রামে এনসিপি’র মানববন্ধন হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে তার জন্মস্থান নলছিটিতে বিক্ষোভ প্রতিবাদ সভা,দোষীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম চৌদ্দগ্রামে কনকাপৈত ইউনিয়ন যুবদলের উদ্যাগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহে সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিকের পায়ের সফল অস্ত্রোপচার চৌদ্দগ্রামকে শান্তির জনপদ হিসেবে গড়তে দলমত নির্বিশেষে ধানের শীষে ভোট দিন : কামরুল হুদা চৌদ্দগ্রামে পাওনা টাকা চাওয়ায় যুবকের উপর হামলা-বেধড়ক মারধর, থানায় অভিযোগ

চৌদ্দগ্রামে ৩ পরিবারের সকলকে বেহুশ করে নগদ টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট

 

 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্প্রে ছিটিয়ে তিন পরিবারের অন্তত ১২জন সদস্যকে অচেতন করে নগদ চার লাখ টাকা সহ ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের জিনিদকরা গ্রামে। এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের সেখানে ভর্তি করা হয়। সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চিওড়া বাজারের একতা ট্রেডার্সের মালিক মো. আব্দুস সাত্তার প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার রাত ১০টায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে যান। ঘরে পৌঁছার কিছুক্ষণ পরই তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল কায়েস বলেন, তার মাথা ঘুরাচ্ছে। পরে কায়েস সহ ঘরে থাকা সকলে অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পাশের দুটি ঘরে থাকা লোকজনও একই সময় অচেতন হয়ে যায়। পরদিন সকালে তাদের ঘরের কেউ ঘুম থেকে উঠছে না দেখে আশেপাশের লোকজন তাদের ডাকাডাকি করেন। এতে ঘর থেকে কোনো প্রকার সাড়া-শব্দ না পেয়ে এলাকার লোকজন জড়ো হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ঘর থেকে ব্যবসায়ী মো. আব্দুস সাত্তার, তার পিতা মো. শাহজাহান, ছেলে আব্দুল্লাহ আল কায়েস, আব্দুল্লাহ আল শুভ, পাশের ঘরের মো. সোলেমান, তার স্ত্রী রাশেদা বেগম, ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন, মেয়ে ঝুমুর আক্তার, নুফুর আক্তার ও নিহা আক্তার, অপর ঘরের মো. মিলন ও তার মেয়ে মিশু আক্তারকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকলকে ভর্তি দেন। এখনো তাদের চিকিৎসা চলছে।

স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, এলাকার সংঘবদ্ধ একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহার করে তিন পরিবারের সকল সদস্যকে অচেতন করে। পরে অজ্ঞাতনামা এ চক্রটি রাতের আঁধারে একটি ঘরে প্রবেশ করে আলমারি ভেঙে বিদেশ যাওয়ার জন্য রাখা নগদ ৪ লাখ টাকা ও ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধিন চিওড়া বাজারের ব্যবসায়ী ভুক্তভোগি মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘কিভাবে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলো কিছুই বুঝতে পারিনি। নতুন ঘটনার ভিকটিম হলাম। আমার পরিবারের সকলে অচেতন হয়ে গিয়েছিলো। সকলের জ্ঞান ফিরলেও এখনো সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছে।

ভুক্তভোগি ঝুমুর আক্তার বলেন, প্রতিদিনের মতই ছোট ভাইকে নিয়ে পড়তে বসি। খাবার খাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে রাত অনুমান ১১টায় মাথা ঘুরাচ্ছে বুঝতে পেরে ঘুমিয়ে পড়ি। পরদিন সকাল ৯টার পরে প্রতিবেশীদের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। মা তখনও অজ্ঞান ছিলো। এ সময় আমরা কেউই ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারছিলাম না। সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ঘরে থাকা আলমারির সামনে ৫শ’ টাকার একটি নোট পড়ে থাকতে দেখি। নগদ টাকা সহ ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রশিদ আহমেদ চৌধুরী তোফায়েল বলেন, অজ্ঞান অবস্থায় একই বাড়ীর তিন পরিবারের প্রায় ১২জন সদস্যকে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং উন্নত চিকিৎসা চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগিরা কিছুই বলতে পারছে না। ধারনা করা হচ্ছে, কোনে চেতনানাশক ব্যবহার করে তাদের অজ্ঞান করা হয়েছিলো। ভুক্তভোগিদের অন্তত ৪৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলেছি। কিভাবে কি ঘটেছে কেউই কিছু বলতে পারছে না। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

জনপ্রিয়

চৌদ্দগ্রামে শ্রীপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে কামরুল হুদার পক্ষে নির্বাচনী গণমিছিল অনুষ্ঠিত

চৌদ্দগ্রামে ৩ পরিবারের সকলকে বেহুশ করে নগদ টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট

প্রকাশের সময় : ০৬:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্প্রে ছিটিয়ে তিন পরিবারের অন্তত ১২জন সদস্যকে অচেতন করে নগদ চার লাখ টাকা সহ ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের জিনিদকরা গ্রামে। এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের সেখানে ভর্তি করা হয়। সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চিওড়া বাজারের একতা ট্রেডার্সের মালিক মো. আব্দুস সাত্তার প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার রাত ১০টায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে যান। ঘরে পৌঁছার কিছুক্ষণ পরই তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল কায়েস বলেন, তার মাথা ঘুরাচ্ছে। পরে কায়েস সহ ঘরে থাকা সকলে অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পাশের দুটি ঘরে থাকা লোকজনও একই সময় অচেতন হয়ে যায়। পরদিন সকালে তাদের ঘরের কেউ ঘুম থেকে উঠছে না দেখে আশেপাশের লোকজন তাদের ডাকাডাকি করেন। এতে ঘর থেকে কোনো প্রকার সাড়া-শব্দ না পেয়ে এলাকার লোকজন জড়ো হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ঘর থেকে ব্যবসায়ী মো. আব্দুস সাত্তার, তার পিতা মো. শাহজাহান, ছেলে আব্দুল্লাহ আল কায়েস, আব্দুল্লাহ আল শুভ, পাশের ঘরের মো. সোলেমান, তার স্ত্রী রাশেদা বেগম, ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন, মেয়ে ঝুমুর আক্তার, নুফুর আক্তার ও নিহা আক্তার, অপর ঘরের মো. মিলন ও তার মেয়ে মিশু আক্তারকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকলকে ভর্তি দেন। এখনো তাদের চিকিৎসা চলছে।

স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, এলাকার সংঘবদ্ধ একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহার করে তিন পরিবারের সকল সদস্যকে অচেতন করে। পরে অজ্ঞাতনামা এ চক্রটি রাতের আঁধারে একটি ঘরে প্রবেশ করে আলমারি ভেঙে বিদেশ যাওয়ার জন্য রাখা নগদ ৪ লাখ টাকা ও ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধিন চিওড়া বাজারের ব্যবসায়ী ভুক্তভোগি মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘কিভাবে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলো কিছুই বুঝতে পারিনি। নতুন ঘটনার ভিকটিম হলাম। আমার পরিবারের সকলে অচেতন হয়ে গিয়েছিলো। সকলের জ্ঞান ফিরলেও এখনো সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছে।

ভুক্তভোগি ঝুমুর আক্তার বলেন, প্রতিদিনের মতই ছোট ভাইকে নিয়ে পড়তে বসি। খাবার খাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে রাত অনুমান ১১টায় মাথা ঘুরাচ্ছে বুঝতে পেরে ঘুমিয়ে পড়ি। পরদিন সকাল ৯টার পরে প্রতিবেশীদের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। মা তখনও অজ্ঞান ছিলো। এ সময় আমরা কেউই ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারছিলাম না। সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ঘরে থাকা আলমারির সামনে ৫শ’ টাকার একটি নোট পড়ে থাকতে দেখি। নগদ টাকা সহ ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রশিদ আহমেদ চৌধুরী তোফায়েল বলেন, অজ্ঞান অবস্থায় একই বাড়ীর তিন পরিবারের প্রায় ১২জন সদস্যকে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং উন্নত চিকিৎসা চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগিরা কিছুই বলতে পারছে না। ধারনা করা হচ্ছে, কোনে চেতনানাশক ব্যবহার করে তাদের অজ্ঞান করা হয়েছিলো। ভুক্তভোগিদের অন্তত ৪৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলেছি। কিভাবে কি ঘটেছে কেউই কিছু বলতে পারছে না। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।