
মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চৌদ্দগ্রাম মডেল কলেজে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় এবার কলেজ থেকে ৩৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র একজন। অকৃতকার্য হয়েছে ৩৪ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ০.১ শতাংশ। আলোচিত বিষয় হলো: যিনি পাস করেছেন, তিনি গত বছরের শিক্ষার্থী। মাত্র এক বিষয় রেফার্ড পরীক্ষা দিয়ে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন। চরম বিপর্যয়পূর্ণ এ ফলাফলটি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কলেজগুলোর ইতিহাসে এইচএসসি’র ফলাফলে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে আজীবন। বিপর্যয়পূর্ণ এ ফলাফলের জন্য কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ টিপু সুলতান এর অদক্ষতা, শিক্ষার্থীদের অমনোযোগীতা ও উদাসীনতা সহ অভিভাবকদের অসচেতনতাকেই দায়ী করছে সচেতন মহল।
জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম মডেল কলেজটি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই এইচএসসি পরীক্ষায় এ কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে ধারাবাহিকভাবে দারুন ফলাফল করে আসছিলো। এরমধ্যে ২০২২ সালে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অত্র কলেজের ৪৩ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৩ জনই কৃতকার্য হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। শতভাগ পাসের রেকর্ড সহ জিপিএ-ফাইভ প্রাপ্তিতেও এ কলেজের বেশ সুনাম-সুখ্যাতি রয়েছে। ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৯০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৫টি জিপিএ-ফাইভ সহ শতভাগ পাসের গৌরব অর্জন করে কলেজটি। ঐবছরের গৌরবময় এ ফলাফলের কারণে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি অর্জন করে। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০২৪ সালেও চৌদ্দগ্রাম মডেল কলেজটি বিগত বছরের ন্যায় ৫টি জিপিএ-ফাইভ সহ ভালো ফলাফল করে। কিন্তু ২০২৫ সালে ৩৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে মাত্র একজন পাশ করে। যা মডেল কলেজের একযুগের ফলাফলের সাথে যায় না। ফলাফলের এ ভরাডুবিকে উপজেলার কলেজ পর্যায়ের ফলাফলের ইতিহাসে কলঙ্কজনক বলে আখ্যা দিয়েছে সচেতন মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চৌদ্দগ্রাম মডেল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কলেজ প্রতিষ্ঠা করে কী লাভ? স্যাররা নিয়মিত কলেজেই আসেন না। তাঁরা তাদের পরিবার নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। এ কলেজে কোন পড়ালেখাই হয় না এখন। পড়ার মান নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কলেজে আসতেও ভালো লাগে না। যারফলে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চরম অবনতি হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ টিপু সুলতাল বলেন, এবার আমাদের কলেজ থেকে মোট ৩৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পাশ করেছে মাত্র ১ জন। ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য সকল শিক্ষার্থীদের ডেকে আনা হয়েছে। তারাও বিষয়টি নিয়ে বেশ মর্মাহত। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সকল শিক্ষার্থীর অভিভাকদের আমরা একাধিকবার তাগাদা দিলেও তাদের সন্তানদের বিষয়ে কোন ভ্রæক্ষেপ নেই তাদের। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের কলেজে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। শিক্ষকদের বেতন ঠিকমতো দিতে পারছিনা।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম মীর হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ভবিষ্যতে কিভাবে এই ফলাফল এড়ানো যায় সেইদিকে লক্ষ্য রেখে নজরদারি বাড়ানো হবে।

মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: 

















