
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার প্রধান নদ-নদী, ছড়া ও খালের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাইনী ও চেঙ্গি নদীর পানি বেড়ে কিছু নিচু এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বুধবার (৯ জুলাই) খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার মুসলিমপাড়া, গঞ্জপাড়া, শালবাগান ও আশপাশের এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, চেঙ্গি নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে, ফলে কয়েকটি পরিবারের ঘরবাড়ি ও আঙিনায় পানি ঢোকার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল বলেন, “এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে কিছুক্ষণের মধ্যেই নদীর পানি আমাদের ঘরে ঢুকে পড়বে। আগেও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। আমরা আতঙ্কে আছি।”
একই চিত্র দীঘিনালা উপজেলার মেরুং এলাকায়। মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বড় মেরুং স্টিল ব্রিজ এলাকায় সড়কে উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন জানান, “সড়কে পানি উঠলেও এখনো যানবাহন চলাচল করছে। তবে যদি উজানে ভারী বৃষ্টি হয়, তাহলে সড়ক পুরোপুরি তলিয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে নিচু এলাকার কিছু ঘরে পানি ঢুকেছে।”
অন্যদিকে, টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে সদর উপজেলার শালবাগান, কলাবাগান ও সবুজবাগ এলাকার শত শত পরিবার। এসব পরিবার পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ চলছে।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় জানান, “শালবাগান, কলাবাগান, সবুজবাগ এলাকায় ৩-৪ শতাধিক পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। টানা বৃষ্টির কারণে যেকোনো সময় পাহাড়ধস হতে পারে। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে শালবাগান প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিশু প্রাইমারি স্কুলে তাদের স্থানান্তর করা হয়েছে। কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিম গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ সহায়তার প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।