, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আজ রাতে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, দেখা যেতে পারে বাংলাদেশ থেকেও চৌদ্দগ্রামের নোয়াবাজারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ভিত্তিক নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র তুলতে আর লাগবে না জিডি চার বছরের শিশুর সামনে মাকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১ চৌদ্দগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত কুমিল্লা নগরীর ছোটরায় ২নং ওয়ার্ডে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বিএমইউজে নাটোর জেলা কমিটি অনুমোদন। : আলেক শেখ সভাপতি, মোহন সাধারণ সম্পাদক চৌদ্দগ্রামে বিপুল পরিমান ফেন্সিডিল সহ চিহিৃত মাদক কারবারি আটক নাঙ্গলকোটে প্রত্যয় সংগঠনের উদ্যোগে সিঙ্গুরিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি কুমিল্লায় সাবেক মেয়র সাক্কুর নেতৃত্বে বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর বিশাল আনন্দর‌্যালী

নানা সমস্যায় জর্জরিত নাঙ্গলকোটের সুবিধা বঞ্চিত এক বিদ্যাপীঠ বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঐতিহ্যবাহী বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সংকট সহ নানাবিধ সমস্যার কারণে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মান্ধাতার আমলের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অত্যান্ত মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা প্রাচীন এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নানাবিধ সমস্যার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আধুনিকতার এই যুগে সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

১৯৪৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাচীন এ বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে অনেক শিক্ষার্থী এখন দেশের সরকারি- বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ সহ বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন। ঐতিহ্যবাহি এ বিদ্যাপীঠটি আজ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বহু আগে নির্মীত বিদ্যালয়ের ভবন গুলো বর্তমানে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। পুরনো দুটি ভবনের অবস্থা খুবেই খারাপ। ভবন গুলোতে এতদিন শিক্ষকমণ্ডলী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বর্তমানে একেবার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে জরার্জীর্ণ ও ঝুকিপুর্ণ একটি ভবনে কোন ভাবে ক্লাস পরিচালনার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উক্ত ভবনের ছাদ দিয়ে পলেস্তারা খসে পড়ছে। ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ের উপর পলেস্তারা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে এমন দৃষ্টান্ত আছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মানও রয়েছে সন্তোষজনক। বিদ্যালয়টিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের পর্যাপ্ত বাথরুম নেই, ছাত্রীদের জন্য নেই কমন রুম, রয়েছে নাম মাত্র একটি শহীদ মিনার, বিদ্যালয়ের সবপাশে নেই কোনো সীমানা প্রাচীর, ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব নেই, বিজ্ঞানাগার ও পাঠাগারের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। এখানে নেই ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট, নেই কোন নামাজ পড়ার স্থান। আছে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট। স্কুল মাঠটিতে গর্তের কারণে বর্ষা মৌসুমে মাঠে পানি জমে থাকে। ফলে ব্যাহত হয় খেলাধুলাসহ ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এদিকে বিদ্যালয়ের জায়গা এবং ভবন গুলো খালের পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষার সময় পানির তোড়ে পেছনের অংশ ধ্বসে পড়ে।
অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিদ্যালয়ের ভবনসহ অবকাঠামোগত অনেক সমস্যা রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিগত দিনে বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কেউ এগিয়ে আসে নাই। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণসহ সার্বিক উন্নয়ন করার দাবী জানান।
প্রধান শিক্ষক আলী আশ্রাফ বলেন, বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংকটের কারণে ক্লাস কার্যক্রম বিঘ্নিত ঘটে। অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সমস্যার মাধ্যমে পরিচালিত হতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মজিবুর রহমান মোল্লা বলেন, প্রচীনতম এ বিদ্যালয়ের যেভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি বিধায় এখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই এ বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ফিরে আনতে সকল ধরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। তিনি বিদ্যালের সার্বিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসারও আহবান জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এ উপজেলার জরাজীর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়ায় আমরা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রেরণ করেছি। তার মধ্যে বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নামও রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ বিদ্যালয় ভবণ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ সহ অবকাঠামো উন্নয়নে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।

জনপ্রিয়

আজ রাতে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, দেখা যেতে পারে বাংলাদেশ থেকেও

নানা সমস্যায় জর্জরিত নাঙ্গলকোটের সুবিধা বঞ্চিত এক বিদ্যাপীঠ বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়

প্রকাশের সময় : ০৭:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঐতিহ্যবাহী বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সংকট সহ নানাবিধ সমস্যার কারণে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মান্ধাতার আমলের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অত্যান্ত মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা প্রাচীন এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নানাবিধ সমস্যার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আধুনিকতার এই যুগে সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

১৯৪৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাচীন এ বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে অনেক শিক্ষার্থী এখন দেশের সরকারি- বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ সহ বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন। ঐতিহ্যবাহি এ বিদ্যাপীঠটি আজ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বহু আগে নির্মীত বিদ্যালয়ের ভবন গুলো বর্তমানে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। পুরনো দুটি ভবনের অবস্থা খুবেই খারাপ। ভবন গুলোতে এতদিন শিক্ষকমণ্ডলী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বর্তমানে একেবার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে জরার্জীর্ণ ও ঝুকিপুর্ণ একটি ভবনে কোন ভাবে ক্লাস পরিচালনার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উক্ত ভবনের ছাদ দিয়ে পলেস্তারা খসে পড়ছে। ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ের উপর পলেস্তারা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে এমন দৃষ্টান্ত আছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মানও রয়েছে সন্তোষজনক। বিদ্যালয়টিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের পর্যাপ্ত বাথরুম নেই, ছাত্রীদের জন্য নেই কমন রুম, রয়েছে নাম মাত্র একটি শহীদ মিনার, বিদ্যালয়ের সবপাশে নেই কোনো সীমানা প্রাচীর, ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব নেই, বিজ্ঞানাগার ও পাঠাগারের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। এখানে নেই ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট, নেই কোন নামাজ পড়ার স্থান। আছে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট। স্কুল মাঠটিতে গর্তের কারণে বর্ষা মৌসুমে মাঠে পানি জমে থাকে। ফলে ব্যাহত হয় খেলাধুলাসহ ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এদিকে বিদ্যালয়ের জায়গা এবং ভবন গুলো খালের পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষার সময় পানির তোড়ে পেছনের অংশ ধ্বসে পড়ে।
অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিদ্যালয়ের ভবনসহ অবকাঠামোগত অনেক সমস্যা রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিগত দিনে বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কেউ এগিয়ে আসে নাই। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণসহ সার্বিক উন্নয়ন করার দাবী জানান।
প্রধান শিক্ষক আলী আশ্রাফ বলেন, বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংকটের কারণে ক্লাস কার্যক্রম বিঘ্নিত ঘটে। অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সমস্যার মাধ্যমে পরিচালিত হতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মজিবুর রহমান মোল্লা বলেন, প্রচীনতম এ বিদ্যালয়ের যেভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি বিধায় এখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই এ বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ফিরে আনতে সকল ধরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। তিনি বিদ্যালের সার্বিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসারও আহবান জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এ উপজেলার জরাজীর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়ায় আমরা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রেরণ করেছি। তার মধ্যে বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নামও রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ বিদ্যালয় ভবণ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ সহ অবকাঠামো উন্নয়নে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।